মালির ছেলে রোলান্ডো এখন ফুটবলের রাজা!
![]() |
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো |
গোটা বিশ্বের সেরা ফুটবলার এখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।
তিনি ৫ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৫ সালে পর্তুগালের ফাঞ্চহাল নামক অঞ্চলের একটি গরীব পরিবারে জন্মগ্রহন করেন। ছোটবেলার কঠর দরিদ্রাকে অতিক্রম করে বর্তমানে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সবচেয়ে বেশি বেতনের টাকা পাওয়া খেলোয়াড়!
তার ফুটবল ক্যারিয়ারে তিনি এখন অবধি ফিফা প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার এবং চারবার ব্যালন ডিও সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। ক্লাবের হয়ে ৬০০ এর বেশি গোল করায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো কে তার ব্যক্তিগত জীবনে অনেক ওঠা-নামার সম্মুখীন হতে হয়েছে। কিন্তু যে জিনিসটা তার জীবনে সবচেয়ে বেশি আগ্রহ ছিল এবং থেকে গেছে তা হলো ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা। "ফুটবল ছাড়া আমার জীবন মূলহীন" - ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। তিনি পর্তুগালেরর একটি গরীব অঞ্চলে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তার বাবা একজন পার্ট টাইম মালি এবং কিট ম্যানের কাজ করতেন। তার বাবার কাজের মধ্য দিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ফুটবলের সাথে পরিচয় হয়। পরিবার কে সমর্থনের জন্য কিছু টাকা রোজগারের উদ্দেশ্যে তার মা অন্যের বাড়িতে রান্না করা এবং বাসন-কোসন মাজার কাজ করতেন। যখন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বয়স ১০ বছর তখনি তার দুর্দান্ত পারদর্শীতার জন্য তিনি বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তার গড ফাদার বলেছিলেন, "ছোটবেলায় সে শুধু একটা কাজই করতে চাইতো আর সেটা হলো ফুটবল।" ১৪ বছর বয়সেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো স্কুল ত্যাগ করে শুধু ফুটবল খেলায় মনোযোগ দেওয়ার জন্য।
রোনাল্ডো আমাদের দেখিয়ে দিয়েছেন, যে আমাদের সব সময় সেই কাজটাই করা উচিত যে কাজটা কে আমরা ভালো বাসি।
রোনালদো আরো বলেছিলেন, "আমি সব সময় বেস্ট হওয়ার চেষ্টা করি এবং তার জন্য কঠোর পরিশ্রমও করি।"
ছোটবেলায় রোনাল্ডো তার লোকাল টিম আন্ডারহীনায় তিন বছর খেলেন। তারপর তিনি ন্যাশনাল টিমে দু'বছর খেলেন তারপর ১২ বছর বয়সে পর্তুগালের একটি ক্লাব টিম ১৫০০ ডলারে রোনাল্ডোকে কিনে নেয়। এমন সময় ১৫ বছর বয়সে তার একটি রোগ ধরা পড়ে রোগটির নাম রেসিং হার্ট প্রবলেম। এটি এমন একটা রোগ যা বিশ্রামের সময়ও রোগীর হার্টবিড একজন সাধারন মানুষের থেকে অনেক বেশি থাকে। রোগটি ধরা পড়ার পর ডাক্তার তাকে বলেন ফুটবল খেলাটা তার জন্য কি হবে না। কেননা এই রেসিং হার্ট প্রবলেম টি অত্যন্ত মারাত্মক এবং এই রোগ অনেক ফুটবলারের হয়েতারা মারা পর্যন্ত গিয়েছে। কিন্তু তার পরও রোনালদো হাল ছাড়ে নি। তিনি একটি অপারেশন করিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন যাতে সে তার ফুটবল খেলা চালিয়ে যেতে পারে। এবং তার অপারেশন সফলও হয় এবং কিছু সপ্তাহ বিশ্রামের পরেই সে আবার ট্রেনিংয়ে ফিরে আসে। এটাই একটি আদর্শ খেলোয়াড়ের গুণ। তিনি সকল ফুটবল প্রেমিকদের জন্য একধরনের অনুপ্রেরণা যারাও এই রোগের কারনে ফুটবল খেলা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এত্ত ছোট বয়সেও সে যদি সাহস না দেখাতো তাহলে হয়তো তার ফুটবল ক্যারিয়ার ১৫ বছর বয়সেই শেষ হয়ে যেতো। যার ফলে আবারও প্রমাণিত হয় যে ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয়। রোগ থেকে উঠে আসার পর রোনালদো কঠোর পরিশ্রম শুরু করে এবং দুর্দান্ত স্কিলের দ্বারা সকলের মন জয় করে নেয়। 16 বছর বয়সেই সে স্পোটিং স্পির হয়ে মাঠে নামে এবং সকলের নজর কাড়েন। ১৭ বছর বয়সে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তাকে 15 মিলিয়ন পাউন্ড দিয়ে সাইন ইন করেন বা কিনে নেন। যেটা সেই সময় কোন প্লেয়ারকে কেনার জন্য সবচাইতে বেশি টাকা ব্যয় করা হয়। রোনাল্ডো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তার দক্ষ স্কিল এর মাধ্যমে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং প্রচুর পরিমাণে অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন। ইউরোপিয়ান প্লেয়ার অব দ্য অ্যাওয়ার্ড, ফিফি প্লেয়ার অব দ্য অ্যাওয়ার্ডসহ অনেক অ্যাওয়ার্ড তিনি অর্জন করেন। 2009 সালের তিনি আরেকটা রেকর্ড করেন যখন তাকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদে 80 মিলিয়ন ডলার দিয়ে কিনে নেওয়া হয়। এত সাফল্যের পরও কিন্তু ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো মানুষকে সাহায্য করা থেকে পিছিয়ে আসেন নি। রোনাল্ডো একটি ব্রিটিশ সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, আমার বাবা আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন যে তুমি যদি কোন মানুষকে সাহায্য করো তাহলে সৃষ্টিকর্তা তোমাকে তার চেয়ে দ্বিগুণ সাহায্য করবেন এবং সেটাই আমার সাথে হয়েছে। তাছাড়া তিনি সেভ দ্য চিলড্রেন চ্যারিটির একটি গ্লোবাল স্টার। যেখানে সে বিভিন্ন রকম বিপদগ্রস্ত মানুষদের সাহায্য করে থাকেন।
তো বন্ধুরা আশা করি ভিডিওটি ভালো লেগেছে।
যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
No comments