অবাক করে দেওয়া অদ্ভুদ ৫ টি আবিষ্কার!
হ্যালো বন্ধুরা!
প্রতিদিন আমাদের জীবনকে সহজ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কারর হচ্ছে। তবে এই অসংখ্য আবিষ্কারের মধ্যে এমন কিছু আবিষ্কার রয়েছে যা মানুষদের জন্য ক্ষতিকর বিষয় হয়ে উঠেছিল। তো আজকে আমরা জানবো সেইসব আবিষ্কারের কথা যা কিছুদিন পড়েই ব্যান বা নিসিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
১। ইলেকট্রিক ব্লানকেট বা কোম্বল:
শীত প্রধান দেশে খুবই প্রয়োজনের জিনিস ইলেকট্রিক কোম্বল। কেননা এই ইলেকট্রিক কোম্বলে আপনারা ইচ্ছা মতো তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। মানে কম্বলের তাপমাত্রা আপনারা ইচ্ছা করলে বাড়াতে পারবেন আবার কমাতে পারবেন। আবার এই কম্বল কে ধুয়ে পরিষ্কারও করতে পারবেন। এতসব সুবিধা থাকার পরেও এই কম্বলটি পৃথিবীর কিছু কিছু দেশ থেকে ব্যান করা হয়েছে কেননা তাপমাত্রা বিশেষজ্ঞদের মতে এই কম্বল যে কোন সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেশি তাপমাত্রায় নিয়ে যেতে পারে যা একজন মানুষের চামড়া পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
তাছাড়া অতিরিক্ত তাপমাত্রা ফলে এই ইলেকট্রিক ব্লাঙ্কেট পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও এটি বৃদ্ধ ও শিশুদের বিভিন্ন রকম শারিরীক সমস্যার সৃষ্টি করে থাকে।
২। স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট সেভেন:
হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন এত বড় কোম্পানির এই ফোনটি পৃথিবীর বাজার থেকে ব্যান করে দেওয়া হয়েছিল। এই ফোনটি 2016 সালের 19 শে অক্টোবর অফিশিয়াল ভাবে লঞ্চ করে। ফোনটিতে অনেক ধরনের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হলেও ফোনে কিছু ঘাটতি ছিলো। যেমন কিছু ইউজার দের মতে ফোনটি ব্যবহার করতে করতে বা চার্জে দিয়ে রাখলে অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যেত।
আমেরিকার কিছু ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে এমন ও তথ্য পাওয়া গিয়েছে যে চার্জ দেওয়া অবস্থায় বা পকেটে থাকা অবস্থায় ফোনটি বাস্ট বা পুড়ে গিয়েছে। এই ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের পরেই আমেরিকা এই ফোন টি কে সম্পূর্ণ ভাবে ব্যান করে দেয়। ব্যান করে দেওয়ার কিছুদিন পরেই স্যামসাং কোম্পানি নোট সেভেন এর উৎপাদন বন্ধ করে দেয় এবং ব্যবহারকারীর যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করে দেয়।
মূলত ফোনের ব্যাটারি সমস্যা জনিত কারণে এই ফোনটির বাস্ট হয়েছে এবং স্যামসাং কোম্পানি থেকে ব্যবহারকারীদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে ভবিষ্যতে যেন এরকম ঘটনা না ঘটে তার জন্য স্যামসাং কোম্পানি ব্যাটারির দিকে আরো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করবে।
৩। স্পাই পেন:
কিছু দেশ এই গ্যাজেট এর ব্যাপারে খুবই সতর্ক। যা দিয়ে বিভিন্ন রকমের গোপন তথ্য খুব সহজে সংগ্রহ করা যায়। উপরের চিত্রে যে কলমটিকে দেখানো হয়েছে সেটিই স্পাই পেন। এই কলমের দ্বারা যেকোনো ধরনের অডিও বা ভিডিও রেকর্ড করা সম্ভব। এটি কলমের মতো দেখতে হওয়ায় বাইরের থেকে বোঝা প্রায় অসম্ভব যে এটি একটি স্পাই পেন এবং এর দ্বারা কথা বা ভিডিও রেকর্ড করা হচ্ছে। এটির ভিডিও কোয়ালিটি এতটাই ভাল যে, এই ভিডিও 4x পর্যন্ত জুম করা সম্ভব এবং এই কলম এর আশেপাশে প্রত্যেকটা মানুষ যা যা কাজ করছে সবই নিখুঁতভাবে রেকোর্ড করা সম্ভব।
৪। ইলেকট্রনিক সিগারেট:
আপনি যদি ধূমপান করে থাকেন তবে এই গ্যাজেটটি আপনার জন্য সবচেয়ে উপকারী হলেও অধিকাংশ দেশে এই গ্যাজেটটি ব্যান করা হয়েছে। কিছু কিছু ইলেকট্রিক সিগারেট এ স্বল্প পরিমাণে নিকোটিন দেওয়া থাকে আবার কিছু সিগারেটে বিভিন্ন রকমের ফ্লেবার দেওয়া থাকে। তবে এই ইলেকট্রিক সিগারেট গুলো সাধারন সিগারেট থেকে অনেক বেশি ক্ষতিকর। কিছু কিছু কোম্পানির দাবি যে এই সিগারেট ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি নিকোটিন থেকে মুক্তি পাবেন। তবে 2008 সালের তথ্য অনুযায়ী দেখা যায় যে, কোম্পানিগুলোর এমন কোন উদ্দেশ্য ছিল না যাতে একজন সিগারেট ব্যবহারকারী নিকোটিন থেকে মুক্তি পেতে পারে। তারা শুধু তাদের পণ্যটিকে বাজারে বিক্রি করার জন্য এটি বলেছিল। যার ফলে 2009 সালেই কিছু বিশেষজ্ঞদের মত নিয়ে এই ইলেকট্রিক সিগারেট বিশ্ববাজার থেকে ব্যান করে দেওয়া হয়।
৫। লেজার পয়েন্টার:
এটি একটি সম্পূর্ণ সেভ টয় হলেও পরবর্তীতে এই লেজার টয় গাড়ি দুর্ঘটনা বা বিমান দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। যদিও এটি একটি পোর্টেবল টুল। যা ইলেকট্রিক ম্যাগনেটিক এর মাধ্যমে একটি সূক্ষ্ম রাশি তৈরি করে। এদের মধ্যে সবচেয়ে সূক্ষ্ণ হলো সবুজ লেজার। যা একজন মানুষের শরীরে পড়লে তার জন্য এই আলোকরশ্মি ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। তবে এই পয়েন্টের গুলোকে ব্যান করে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে আপনি যদি এই পয়েন্টের গুলো দিয়ে কোন ব্যক্তির চোখে 10 থেকে 20 সেকেন্ড ধরে রাখেন তাহলে আপনি সেই ব্যক্তির চোখ পর্যন্ত নষ্ট করে দিতে পারেন। যার ফলে এই পয়েন্টের গুলোকে ব্যান করে দেওয়া হয়।
৬। ব্ল্যাকবেরি ফোন:
সর্বপ্রথম 1997 সালে ব্ল্যাকবেরি ফোন তাদের ওয়ারলেস কমিউনিকেশন ফোন বাজারে আনে এবং তারা খুব তাড়াতাড়ি বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাদের ফোনে সবচেয়ে সুবিধাজনক ব্যাপারটি ছিল হাইলি সিকিউরিটি। এর ফলে একটি ডিভাইস হতে অন্য ডিভাইসে ডাটা এন্ট্রি করে পাঠানো যেতো। যার ফলে সেন্ডার এবং রিসিভার ছাড়া ওই ডাটা অন্য কারো পক্ষে দেখা সম্ভব ছিল না। এর ফলে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো তাদের গোপনীয় ডাটা ব্লাকবেরি ফোনের মাধ্যমে আদান প্রদান করত। যদিও হাই সিকিউরিটি সবার জন্য সুবিধাজনক নয়। কিছু দেশ সিদ্ধান্ত নিল ব্ল্যাকবেরি ফোন টিকে তাদের দেশ থেকে ব্যান করে দেয়া হবে এবং এসবের সবচেয়ে বড় কারণ হলো হাইসিকিউরিটি এনক্রিপশন। যা দেশগুলোর আইনি সংস্থা এবং স্পেশাল হাইসিকিউরিটি বিভাগ কে ইউজারেরর মধ্যে আদান প্রদান কৃত ম্যাসেজ পড়তে দিত না বা তাদের ওপর নজরদারি করতে দিত না।
যদি আমাদের ব্লগ আপনার ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিন।
No comments